(পর্ব ২>)
মোঃ গোলাম রাব্বানী ক্রাইম রিপোর্টার রাজশাহী গোদাগাড়ী
রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানা এলাকায় জলাহার গ্রামে ভুয়া ওয়ারিশ দেখিয়ে ভুমি দুস্য কর্তৃক অন্যের জমি জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সুত্রে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধানে খোজখবর নিয়ে জানা যায়, জলাহার গ্রাম সংলগ্ন ১৯৪ নং জোতফুত মৌজার সি.এস প্রজা আলিম মন্ডল খতিয়ান সিএস ৮ ও ৯ নং আলিম মন্ডল আট আনা অংশ, গুলবাস বিবি চার আনা অংশ ফয়জান বিবি দুই আনা অংশ, হামমাম বিবি দুই আনা অংশ, কলিম মন্ডল এক আনা অংশ। সিএস ৮ ও ৯ নং খতিয়ান ৬ টা দাগে মোট জমি ১৬৭৭ (১২৭৭+১০৪) একর, সি এস প্রজা আলিম মন্ডল তার জীবন দাসায় গত
তারিখ: ১৫/০১/১৯২০, দলিল নং: ১৪, পরিমাণ: ১.৬৫ একর,পর পর বেশ কয়েকটি দলিল, তারিখ: ২৯/০১/১৯২৪, দলিল নং: ৪৫৯, পরিমাণ: ৯৯ একর, তারিখ: ১৩/০১/১৯২০, দলিল নং: ১৭২১, পরিমাণ: ১.৪০ একর, তারিখ: ০৪/০৫/১৯৩৬, দলিল নং: ১৩৩৮, পরিমাণ: ১.১৬ একর,
তারিখ: ৩০/০৪/১৯৩৪, দলিল নং: ১০৫৭, পরিমাণ: ২.২৪ একর, তারিখ: ১৮/১০/১৯৩৮, দলিল নং: ২০৮৩, পরিমাণ: ৩.৫০ একর, মোট পরিমাণ = ১০.৯৪ একর।
উক্ত আলিম মন্ডল ৬ দলিলে ১০.৯৪ জমি বিক্রয় করে সি.এস খতিয়ান মোতাবেক আট আনা অংশে জমি প্রাপ্ত হয়। ৬.৮৯ একর সে অতিরিক্ত ৪.০৪ একর জমি বিক্রয় করে।
সি.এস প্রজা গুলবাশ বিবি চার আনা, ফয়জান বিবি দুই আনা, হামমাম বিবি দুই আনা, ফরজান মৃত্যান্তে ছেলে ইয়াসিন আলী তার ১ আনা অংশসহ মোট ৬ আনা অংশে ক্রয় করে সি এস ৮ ও ৯ নং খতিয়ানে ৭টি দাগে ০৩/০৫/১৯৬৭ তারিখে ৫৬৯৬ নং দলিলে ৫.১২ একর অংশ বিক্রয় করিয়া দখল শূন্য হন।
সিএস খতিয়ানে অন্যান্য প্রজাগনের মধ্যে গুলবাস বিবি হামমাম ফয়জানের ছেলে মোঃ ইয়াসিন আলী গনের নিকট হইতে ৬ আনা অংশ মোতাবেক গত ০৩/০৫/১৯৬৭ তারিখে ৫৬৯৬ নং দলিলে ৫.১২ খরিদ করেন। উক্ত সম্পত্তি দখল ভোগ থাকা কালে এস এ রেকর্ড প্রস্তুত হওয়ার সময় বিভিন্ন প্রজার নামে ৭টি খতিয়ান প্রস্তুত হয়। যার মধ্যে এস এ খতিয়ান ৮/২ খতিয়ানে রিয়াজ উদ্দীন গং ৫.১২ এর স্থলে ২.৬৬ রেকর্ড হয় এবং অবশিষ্ট ২.৪৬ একর জমি ৭টি এসএ খতিয়ানে অন্তর ভুক্ত হয়।
উক্ত ৫.১২ সম্পত্তি ওয়জুদ্দীন গং দখল ভোগ করিয়া আসিতেছিল। সিএস প্রজা আলিম মন্ডল এর ৮ ও ৯ খতিয়ানে জমি আলিম মন্ডল এস এ খতিয়ানে কোন প্রকার নাম গন্ধ বা অংশ ছিল না, এবং উপরোক্ত ৭টি দলিলে প্রজাগন নিজ নিজ নামে এসএ রেকর্ড প্রস্তুত করেন। আর এস রেকর্ড প্রস্তুত হওয়ার সময় আর এস ২৫ খতিয়ানে ২.৬৪ একর এর মধ্যে ওয়জুদ্দীন গং ৬ আনা কলিম উদ্দীন ২ আনা আলিম মন্ডল ৮ আনা।
আর এস ৩টি দাগে ২.৬৪ ভূমাতাক ভাবে রেকর্ড হয় যাহা ওয়জুদ্দীন গং ১৯৬৭ হইতে দলিল মোতাবে ৫.১২ এরকর সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসিতেছিল। আমরা বিবাদীয় সম্পত্তি ভোগ দখল থাকা কালে আলিম মন্ডল নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান।
ওয়জুদ্দীন গং মৃত্য বরণ করিলে তাদের ওয়ারিশগন নিজ নিজ অংশ বুঝিয়া নেওয়ার জন্য এলাকার স্থানীয় গন্য মান্য ব্যক্তি বর্গরা শালিশে বসিলে শালিশী বোর্ড উভায়ের কাগজ পত্র প্রয়োজন হওয়ায় কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় এস,এ রেকর্ড ও আর এস রেকর্ড দলিল মোতাবেক রেকর্ড না হওয়ায় সালিশী প্রধান ব্যাক্তিবর্গগণ সকল ওয়ারিশ কে আদালতে রেকর্ড কারেকশনের পরামর্শদেন ওয়জুদ্দীন গং এর ওয়ারিশগন এর পর তারা রাজশাহী গোদাগাড়ী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন যাহার মামলা নং ৯৯/২০১৬ তারিখে রেকর্ড কারেকশানের মামলা দায়ের করেন।
উক্ত মামলার বাদীগণ জানান মামলা চলমান অবস্থায় নিঃসন্তান আলিম মন্ডলের গোদাগাড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়াড কাউন্সিলর জনাব মোঃ শহিদুল ইসলাম, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিঃসন্তান আলিম মন্ডলের ভুয়া দুই মেয়ে সন্তান ওয়ারিশ দেখিয়ে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট প্রদান করেন। সেই ওয়ারিশন মোতাবেক তার ওয়ারিশেরা গোদাগাড়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নামজারির আবেদন করিলে আবেদন কেসটি তদন্তের জন্য গোদাগাড়ী ইউনিয়ন ভুমি অফিসে প্রেরক করে ভুমি অফিস কর্তৃক তহসিলদার নামজিরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহকারে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সেই সংবাদ ওয়জুদ্দীন গং এর ওয়ারিশ মোঃ মঞ্জুর রহমান গোদাগাড়ী সহকারী জজ আদালত হইতে বিবাদীয় জমির
মামলার ইনফরমেশন স্লিপ সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব মোঃ জাহিদ হাসান কে মামলার ইনফরমেশন স্লিপটি দেখালে সেটা এ্যালাউ না করে ভুয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেটের ওয়ারিশগন(১) মোঃ মন্টু শেখ (৬৫) দিগরগনকে জমির নামজারি দেন এবং ভূমিদস্যাগন (১) মোঃ নয়ন আলী (৪০), (৩) মোঃ ইউনুস আলী (৫০), (৪) মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪০), ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার, (৫) মোঃ শাজাহান আলী (৫৭) জোর পূর্বক জমি জবর দখল করিয়া খাইতেছে। এমন দাবি করেছেন মহিশাল বাড়ি এলাকার মঞ্জুর রহমান নামের ঐ ব্যাক্তি, তিনি আরও বলেন।
গোদাগাড়ী সহকারি কমিশনার ভুমি সেই জমিটির নামজারি দিয়া আমাদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি করিয়াছে। এদিকে ভুয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট যাচাই বাছাই করার জন্য গোদাগাড়ী পৌর সভায় গেলে নাম প্রকাশ না শর্তে অফিস সুত্রে জানা যায় ,৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট প্রদান করিয়াছেন। বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তার কৃর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল বলে। মঞ্জুর রহমান নামের ঐ ব্যাক্তি সাংবাদিকদের সামনে অনেকটাই প্রকাশ করেন।
রাজশাহী গোদাগাড়ী পৌরসভার ৩ নং প্যানের মেয়র মোঃ শহিদুল ইসলাম, নিঃসন্তান মৃত আলিম মন্ডলের দুই মেয়ে দেখিয়ে গত ০৫/১১/২০২৩ তারিখে ওয়ারিশন পত্র দেন। সেই ওয়ারিশন পত্র কতটুকু সঠিক ০১৭৪৭,৩৬০ ৩১৩ তার মুঠোফেনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফোন বন্ধ থাকাই স্বাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর পর থেকে শুরু হয় তাদের এই জমির জালিয়াতির পরিকল্পনা, মৃত: ওয়াজেদ উদ্দিনের ছেলে মঞ্জুর রহমান তিনি বলেন নিঃসান ব্যাক্তির ওয়ারিশ কোথায় থেকে এলো, তার সন্দেহ হলে নিঃসন্তান মৃতঃ আলিম মন্ডলের কোন ছেলে মেয়ে আছে কিনা এই মর্মে প্রত্যয়ন এর জন্য গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র বরাবর একটি লিখিত আবেদন কবরেন। আবেদনের বিষয়টি মেয়র অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস তদন্ত করে মৃতঃ আলিম মন্ডলের নিঃ সন্তান প্রমানিত হওয়ায় গত ২৪/০১/২০২৪ তারিখে একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন মঞ্জুর রহমানের নিকট।
এর মধ্যে সরকার পতনের পর সর্বশেষ আবেদন করেন রাজশাহী গোদাগাড়ী পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সেখানেও আবেদন টি তদন্ত করে গত ১৯/১১/২০২৪ইং তারিখে মোহাঃ সারয়ার জাহান পৌর নির্বাহী কর্তকর্তা (অঃদঃ) গোদাগাড়ী রাজশাহী মৃত: আলিম মন্ডল নিঃসন্তান ছিলেন। একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন মোঃ গোলাম রব্বানীর নিকট, তবে নিঃসন্তান ব্যাক্তির ভুয়া ওয়ারিশ দেখানোর দায়ে গোদাগাড়ী পৌর সাবেক কাউন্সিলর কে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Leave a Reply